পশ্চিমবঙ্গ সংবাদদাতা : পশ্চিমবাংলার আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হয়েই চলেছে। এ ব্যাপারে ধারাবাহিক ভাবে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করে আসছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। শেষে আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। এমনকী, তার সময়সীমাও তিনি নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। সেই সময়সীমা ছিল শনিবার দুপুর দুটো। কিন্তু মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে শনিবার সারাদিন রাজভবনে যাননি। সেই ঘটনায় রাজ্যপালও নিজের ক্ষোভ গোপন রাখেননি। টুইট করে সমালোচনা করেন মুখ্যসচিবের। ঘটনাটিকে তিনি ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে উল্লেখও করেন।
রাজ্যের আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে মুখ্যসচিবকে দেখা করতে বলে তিনি যে টুইট করেছিলেন, তাতে পূর্বতন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকেও কটাক্ষ করেছিলেন। লিখেছিলেন, ‘গত অগস্ট মাসে যিনি মুখ্যসচিব পদে ছিলেন, এ বিষয়ে জবাব চেয়েও তাঁর কাছ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।’ এর পরই তিনি সরাসরি বর্তমান মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে লেখেন, ‘আশা করি মুখ্যসচিব পদে থেকেও প্রতিক্রিয়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত এবার পুনর্বিবেচনা করা হবে। আপনি অবশ্যই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে দেখা করবেন।’ কিন্তু রাজ্যপালের ওই নির্দেশের পরও শনিবার দুপুর দুটোর মধ্যে মুখ্যসচিব রাজভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল ফের টুইট করেন। লেখেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হল, রাজ্যের মুখ্যসচিবকে কোনও প্রশ্ন করলে তার জবাব পাওয়া যায় না।’
এর ফলে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে সঙ্ঘাত আরও ঘনীভূত হয়ে উঠবে বলে ধারণা রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক মহলের। বেশ কয়েক মাস ধরে রাজ্যের আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল। কখনও কখনও মুখ্যমন্ত্রীকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। জবাবে কয়েকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পত্রাঘাত করেছেন। ফলে নবান্ন ও রাজভবন সঙ্ঘাত ক্রমশ তীব্রই হয়েছে। সেইসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় নবতম সংযোজন হল এই ঘটনা। এমনই ধারণা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের।